মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য মন্ত্রীপরিষদ
- মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের প্রকৃত শাসক শাসনতান্ত্রিক প্রধান ।
- ভারতীয় সংবিধানের ১৬৩ ধারায় বলা হয়েছে রাজ্যপালকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি মন্ত্রীপরিষদ থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রীর নিয়োগঃ
- ভারতীয় সংবিধানের ১৬৪ ধারা অনুসারে রাজ্যপাল সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়োগ করেন ।
- মুখ্যমন্ত্রীর নিয়োগ সম্বন্ধে সংবিধানে বিশেষ কিছু বলা না থাকলেও রাজ্যপাল যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ করতে পারেন না।
- প্রথাগত ভাবে, বিধানসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠ দলের নেতা বা নেত্রীকে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত করেন ও তাঁকে মন্ত্রিসভা গঠনের দায়িত্ব দেন ।
- নির্দিষ্ট সংখ্যা গরিষ্ঠতা না থাকলে রাজ্যপাল নিজের ব্যক্তিগত বিচক্ষণতায়(on Personal Discretion) যে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে নিয়োগ করতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তিকে এক মাসের মধ্যে রাজ্য আইনসভায় আস্থা ভোটের( Vote of Confidence)মাধ্যমে নিজের গ্রহণ যোগ্যতার পরিচয় দিতে হয়।
- রাজ্য আইনসভার সদস্য নন, এমন ব্যক্তিও মুখ্যমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাঁকে ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর যোগ্যতাবলী:-
- ভারতের নাগরিক হতে হবে ।
- মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভার সদস্য হলে বয়স অন্তত ২৫ বছর এবং বিধান পরিষদের সদস্য হলে বয়স অন্তত ৩০ বছর হতে হবে ।
শপথঃ
- রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীকে শপথ বাক্য পাঠ করান ।
কার্যকাল ও বেতনঃ
- মুখ্যমন্ত্রীর কার্যকালের মেয়াদ স্থায়ী নয়, রাজ্যপালের সন্তুষ্টিকাল অবধি পদে আসীন থাকতে পারেন(term of Chief Minister is not fixed and he holds his office during the pleasure of the governor)। তবে-
- রাজ্যপাল যেকোনও সময় তাঁকে অপসারণ করতে পারবেন না।
- রাজ্য আইনসভার সংখ্যা গরিষ্ঠতা যতক্ষন উপভোগ করেন ততক্ষন পর্যন্ত রাজ্যপাল তাকে বরখাস্ত করতে পারবেন না।
- সাধারণত রাজ্য আইনসভার কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কার্যকালের সময়সীমা পাঁচ বছর হয়।
- রাজ্য আইনসভা দ্বারা মুখ্যমন্ত্রীর বেতন ও ভাতা ধার্য করা হয়।
ক্ষমতা ও কার্যাবলীঃঅঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর কার্য সম্পন্ন করার জন্য রাজ্য মন্ত্রীসভা, আইনসভা ও রাজ্যপালের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলতে হয়।
- মন্ত্রীসভার সহিত সম্পর্কঃ
- রাজ্যের মন্ত্রীসভার গঠন, দপ্তর বণ্টন এবং মন্ত্রীদের পদচ্যুতি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই হয়ে থাকে।
- তিনি রাজ্য মন্ত্রীসভার অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
- মন্ত্রীদের কার্যাবলীর নিয়ন্ত্রণ ও সংহতি সাধন(Contrl and Coordination) করেন।
- মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করলে মন্ত্রীসভা পদত্যাগ করতে বাধ্য। তাঁর মৃত্যু হলে মন্ত্রীসভা স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে যায়।
- রাজ্য আইনসভার সহিত সম্পর্কঃ
- রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন আহ্বান ও স্থগিত রাখার জন্য তিনি রাজ্যপালকে পরামর্শ দেন।
- প্রয়োজন হলে তিনি আইনসভা ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দেন রাজ্যপালকে।
- রাজ্যপালের সহিত সম্পর্কঃ
- ১৬৭ নং ধারা অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও রাজ্য মন্ত্রীসভার মধ্যে প্রধান যোগসূত্র রক্ষা করেন। তিনি মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত ও কাজকর্ম সম্পর্কে রাজ্যপালকে অবহিত করেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
- প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী- সুচেতা কৃপালিনী
- প্রথম দলিত মহিলা মুখ্যমন্ত্রী- মায়াবতী
- প্রথম নির্দল মুখ্যমন্ত্রী- মধু কোদা