আকবর ( ১৫৫৬-১৬০৫ খ্রিঃ ) :

জন্ম ও বংশ পরিচয়:-

  • জালালউদ্দিন মহম্মদ আকবর ছিলেন হুমায়ুনের পুত্র , মাতা ছিলেন হামিদাবানু বেগম । তিনি ১৫৪২ খ্রিঃ সিন্ধু প্রদেশের অমরকোটে জন্মগ্রহণ করেন ।

সিংহাসন আরোহন:-

  • ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে পিতা হুমায়ুনের মৃত্যুর পর আকবর (হুমায়ুনের জ্যেষ্ঠপুত্র)১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ই ফেব্রুয়ারি দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন মাত্র ১৩ বছর ৪ মাস বয়সে। কিন্ত তাঁর রাজ্যাভিষেক হয় ১৪ ই ফেব্রুয়ারি ১৫৫৬ সালে।
  • এই সময় নাবালক মুঘল সম্রাটের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হুমায়ুনের বিশ্বস্ত বন্ধু বৈরাম খাঁ।
  • আকবর সিংহাসনে আরোহণ করেই দিল্লীর জামি মসজিদে নিজের নামে খুদবা পাঠ করে “শাহেনসা” উপাধি নেন।
  • অভিভাকক বৈরাম খাঁ প্রধানমন্ত্রী বা “ভকিল-উল্-সুলতানেত”- রূপে নিযুক্ত হন এবং আকবরের কাছ থেকে “খান-ই-খানান“-উপাধিতে ভূষিত হন।
  • ১৫৫৬-১৫৬০ খ্রিঃ পর্যন্ত আকবরের শাসন কার্য পরিচালনা করত বৈরাম খাঁ ।

    সাম্রাজ্য বিস্তার:-

    • আকবর, বৈরাম খাঁর নেতৃত্বে ১৫৫৬ খ্রিঃ দ্বিতীয় পানিপথের যুদ্ধে আদিল শাহের সেনাপতি হিমুকে পরাজিত করে ।
    • ১৫৬১ খ্রিঃ তিনি মালব আক্রমণ করেন ১৫৬১ থেকে ৬৪ খ্রিঃ পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলে মালব রাজ বাজ বাহাদুরকে পরাজিত করেন । এই সময় তার সেনাপতি ছিল আদম খান ও পীর মহম্মদ।
    • ১৫৬৪ খ্রিঃ মধ্যপ্রদেশের গড় কাটাঙ্গ আক্রমণ করেন এই সময় রাজা ছিলেন রানি দুর্গাবতী । তিনি চিতােরের শরণাপন্ন হয় কিন্তু তিনি পরাজিত হন ।
    • ১৫৬২ খ্রিঃ তিনি অম্বর আক্রমণ করেন এবং রাজা বিহারিমল তার বশ্যতা স্বীকার করলে তিনি বিহারিমলের কন্যা যোধাবাঈকে (মরিয়ম) বিবাহ করেন এবং বিহারিমলকে জয়পুরের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন । ১৫৮৪ খ্রিঃ রাজপুত্র সেলিমের সঙ্গে বিহারীমলের পুত্র রাজা ভগবান দাসের কন্যা মানাবাঈ এর বিবাহ দিয়ে তিনি তার সাম্রাজ্য মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন ।
    • ১৫৭২ খ্রিঃ গুজরাট আক্রমণ করেন এবং তৃতীয় মুজাফর শাহকে পরাজিত করেন । আকবর, বুলন্দ দরওয়াজা ও ফতেপুর সিকরি ( ১৬০২ ) তৈরি করেন ।
    • ১৫৭৬ খ্রিঃ হলদিঘাটের যুদ্ধে আকবরের সেনাপতি রাজা মানসিংহ ( বিহারিমলের পৌত্র ) ও আসিফ খানের নেতৃত্ব রানা প্রতাপকে পরাজিত করে এবং রাজপুত সাম্রাজ্য দখল করে । রাজা মান সিংহের নেতৃত্বে বাংলা , বিহার ও ওড়িশা দখল করে ।
    • ১৫৯১ খ্রিঃ মান্দ্রেশ ও ১৫৯৫ খ্রিঃ বালুচিস্তান , কান্দাহার তার সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয় ।
    • ১৫৮৬ খ্রিঃ কাশ্মীর ও ১৫৯৩ খ্রিঃ সিন্ধ জয় করেন ।
    • ১৫৯৯ খ্রিঃ দৌলতাবাদের সুলতানা চাদ বিবিকে পরাজিত করে দাক্ষিণাত্য দখল করে । তার শেষ যুদ্ধ ছিল আসিরগড় দুর্গ জয় ১৬০১ খ্রিঃ ।

    শাসনব্যবস্থা:-

    • আকবর তাঁর সাম্রাজ্যকে ১৫ টি সুবা বা প্রদেশে ভাগ করেন। সুবার শাসনকর্তাকে সুবাদার বা সিপাহসলা বলা হত। সুবাদার ছাড়াও প্রত্যেক প্রদেশে একজন করে দেওয়ান থাকতেন।
    • প্রত্যেকটি সুবা কয়েকটি সরকারে এবং প্রত্যেকটি সরকার কয়েকটি পরগনায় এবং প্রতিটি পরগনা কয়েকটি গ্রামে বিভক্ত ছিল।
    • মনসবদারি প্রথা:- মুঘল সম্রাট আকবর পারস্যদেশের অনুকরণে ১৫৭০ খ্রিস্টাব্দে পদমর্যাদা অনুযায়ী সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীদের যে ধাপে ধাপে ভাগ করেছিলেন সেগুলিকে মনসব (পদমর্যাদা) বলা হয়। মনসব যারা পেতেন তাদের বলা হত মনসবদার। মনসবদাররা যে পদমর্যাদা অনুযায়ী বেতন পেতেন তা থেকে নির্দিষ্ট সেনা ও ঘোড়া রাখতেন। যুদ্ধকালে সম্রাটকে তাঁরা সেনা পাঠাতেন। সর্বনিম্ন ১০ এবং সর্বোচ্চ ৫০০০ পর্যন্ত ধাপের মনসবদার ছিলেন। ৭ হাজার, ৮ হাজার ও ১০ হাজার মনসবদারি রাজার কিছু বিশ্বস্ত ব্যক্তি ও রাজপুরুষদের দেওয়া হয়েছিল। এই প্রথার ত্রুটি দূর করার জন্য পরবর্তী সময়ে মনসবদার পদের সঙ্গে ‘জাট’ ও ‘সওয়ার’পদ দুটির প্রবর্তন করেন। এই শব্দ দুটির প্রকৃত অর্থ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও অধিকাংশ ঐতিহাসিকের মতে ‘জাট’ হল একজন মনসবদারের পদমর্যাদা ও বেতন। আর সওয়ার’ হল একজন মনসবদারের অধীনে কতজন অশ্বারোহী সেনা থাকবে তার হিসাব।

    ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা:-

    • 1582 খ্রিস্টাব্দে সম্রাট আকবরের দেওয়ান পদে নিযুক্ত হয়ে (রাজস্বমন্ত্রী) টোডরমল ভূমি রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে যে নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন, তা টোডরমল ব্যবস্থা নামে খ্যাত। এই ভূমি ব্যবস্থা তিন প্রকার যথা জাবতি বা দহশালা,গাল্লাবক্স ও নসক।
    • জাবতি প্রথা হল 'ইলাহি গজ' নামক চেন দ্বারা জমি জরিপ করে জমির উৎপাটপাদিকা শক্তি অনুযায়ী ভূমিরাজসস্ব নির্ধারণ করা। উৎপাটপাদিকা শক্তির নির্ভর করে জমিকে চার ভাগে ভাগ করা হয় যথা
      • পোলাজ- যে জমিতে প্রতি বছর চাষ করা হয়।
      • পৌরতি- যে জমিতে কয়েক বছর চাষের পর দু-এক বছর পতিত রাখা হত।
      • চাচর- যে জমিতে কয়েক বছর চাষের পর তিন চার বছর পতিত রাখা হত।
      • বানজার- যে জমিতে কয়েক বছর চাষের পর তিন পাঁচ বছর বা তার বেশী সময়ের জন্য পতিত রাখা হত।
      প্রথম তিন শ্রেণীর জমির বিগত দশ বছরের উৎপাদনের গড় হিসাব করে উৎপন্ন ফসলের ১/৩ অংশ রাজস্ব ফসলে বা নগদে নির্ধারিত হত।উত্তর ভারতের বিস্তৃন অঞ্চলে (যেমন দিল্লী-লাহোর-মুলতান-আগ্রা- এলাহাবাদ-অযোধ্যা-মালব এবং বিহার এই আটটি প্রদেশে চালু ছিল) এই ব্যবস্থা চালু ছিল।একে “দহশালা” ব্যবস্থাও বলে।
    • গাল্লাবক্স বা বাতাই প্রথা চালু ছিল সিন্ধু প্রদেশ, কাশ্মীর,কান্দাহার ও কাবুলে। রাজস্ব নির্ধারণের জন্য তিনটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হত-
      • রসি বাটাই- ফসল তোলার সময় দুপক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে রাজস্ব নির্ধারিত হত।
      • ক্ষেত বাটাই- জমিতে বীজ বপনের পরেই দুপক্ষের মধ্যে জমি বণ্টন করা হত।
      • ল্যাক্স বাটাই- উৎপন্ন শস্যের এক-তৃতীয়াংশ রাজস্ব নির্ধারিত হত।
    • নসক ব্যবস্থা চালু ছিল কাঁথিয়াবার, বাংলাদেশ ও গুজরাটে। বিগত দশ বারো বছরের রাজস্বের উপর ভিত্তি করে আনুমানিক রাজস্ব নির্ধারণ করা হত।
    • গ্রামস্তরে রাজস্ব আদায় করত পাটোয়ারী।পরগনা স্তরে রাজস্ব আদায় করত কানুনগো।এছাড়াও কানুনগো তাকাভি ঋণ দানে কৃষদের সাহায্য করত।সরকার বা জেলাস্তরে খাজনা আদায় করত আমিল বা ক্রোরি (এদের সংখ্যা ছিল ১৮২ জন), তাকে সাহায্য করত কারকুন (Accountant) ও খাজনাদার(কোষাধ্যক্ষ)।প্রদেশের রাজস্ব বিভাগের প্রধান ছিলেন দেওয়ান।

    ধর্মীয় নীতি:-

    • আকবর গৃহ শিক্ষক আব্দুল লতিফ ও পারসিক শিক্ষক পীর মহম্মদের কাছ থেকে “সুলহ্-ই-কুল” বা সকল ধর্ম সমন্বয়ের শিক্ষা নেন।
    • ইবাদৎখানা :- ইবাদৎখানা ছিল মুঘল সম্রাট আকবর কতৃক ১৫৭৫ খ্রিস্টাব্দে ফতেপুর সিক্রিতে প্রতিষ্ঠিত একটি ধর্মালোচনা সভাগৃহ। বিভিন্ন ধর্মের বিষয় আলোচনা,প্রকৃত ধর্মের মূল সত্য নির্ণয় এবং এর সাথে ঈশ্বর শক্তির সম্পর্ক নির্ণয় করতে এবং ধর্মীয় বিভেদ দূর করতে এটি আকবর প্রতিষ্ঠা করেন। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ এই ইবাদৎখানাকে “ First world Religious Parliament“- বলে অভিহিত করেছেন।বিভিন্ন কারণের ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে ইবাদৎখানা বন্ধ করে দেন।
    • মাজহারনামা :- ১৫৭৯ খ্রিস্টাব্দের ২ রা সেপ্টেম্বর শেখ মুবারক রচিত ঘোষণাপত্র আগ্রা থেকে জারি করে বলেন ইসলাম ধর্ম বা কোরানের কোনো ব্যাখা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে সম্রাটের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।অর্থাৎ এই নির্দেশনামা নিজেকে “ইমাম-ই-আদিল” বা ঐসলামিক আইনের চূড়ান্ত ব্যাখ্যাকার বলে ঘোষণা করেন।এটিই মাজহার নামে খ্যাত।স্মিথ এই ঘোষণাপত্রটিকে “Infallibility Degree” বা “অভ্রান্ত নির্দেশনামা”- বলে উল্লেখ করেছেন।
    • দীন-ই-ইলাহী :-জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে মুঘল সম্রাট আকবর 1582 খ্রিস্টাব্দে যে একেশ্বরবাদী ধর্মমতের প্রবর্তন করেন তার নাম “দীন-ই-ইলাহী” এর অর্থ হল দৈবাদেশ– যেখানে সবধর্মের সার কথা বলা হয়েছে।এর আদর্শ “সুল-ই-কুল” বা সকল ধর্ম সমন্বয়। ১৮ জন বিশিষ্ট মুসলমান ও বীরবল(আসল নাম মহেশ দাস) নামে এক হিন্দু আমীর এই ধর্মমত গ্রহণ করেন। রাজা মানসিংহ ও ভগবান দাস “দীন-ই-ইলাহী”- গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন।
    • ১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে আকবর এক আইন জারি করে হিন্দু যুদ্ধ বন্দীদের ক্রীতদাস বানানোর আইন বন্ধ করে দেন।
    • ১৫৬৩ আকবর খ্রিস্টাব্দে হিন্দুদের উপর থেকে তীর্থকর এবং জিজিয়া কর তুলে দেন।

    সাহিত্যচর্চা:-

    • আবুল ফজল রচনা করেন আকবরনামা বা আইন-ই-আকবরী
    • তাঁর আমলে তুলসী দাস “রামচরিতমানস”-গ্রন্থ লেখেন।
    • আবদুল রহিম খান-ই-খান্না তুর্কি ভাষায় অনুবাদ করেন বাবরনামা।
    • এই সময় “সুরসাগর” গ্রন্থটি তৈরি করেন সুরদাস।
    • ”অথর্ববেদ” ফার্সীতে অনুবাদ করেন ইব্রাহিম-সিরহিন্দ-শেখ সুলতান এই তিনজনে মিলে।
    • আবুল ফজলের দাদা ফৈজি “লীলাবতী”ও “নলদময়ন্তী” গ্রন্থ রচনা করেন।
    • ”পঞ্চতন্ত্র”-অনুবাদ করেন আবুল ফজল।
    • ফার্সীতে রামায়ন অনুবাদ করেন আব্দুল কাদের বদাউনি।
    • ’জাতক’ ফার্সিতে অনুবাদ করেন মখমল খাঁ।
    • তিনি মহাভারতকে ফার্সিতে অনুবাদ করেন আবুল ফজলের সাহায্যে এবং তিনি মহাভারতের নাম দেন “রজমনামা”।
    • আকবর জৈন পন্ডিত হরিবিজয়সুরীকে “জগতগুরু”-উপাধি দেন এবং জিনচন্দ্রসূরীকে “জগপ্রধান”- উপাধি দেন।

    স্থাপত্য :-

    • একাদশ শতকে নির্মিত প্রাচীন আগ্রা ফোর্ট(পূর্ব নাম বাদালগড় দুর্গ)-এর সংস্কার সাধন করেন সম্রাট আকবর।
    • আকবর ফতেপুর সিক্রি নামে একটি শহর স্থাপন করেন এবং গুজরাট জয় স্মরণীয় করে রাখার জন্য শহরের মূল প্রবেশদ্বার বুলন্দ দরওয়াজা নির্মাণ করেন।

    আকবরের নবরত্ন :

    • আবুল ফজল –তিনি ছিলেন আকবর নামার লেখক ও আইন – ই আকবর এর প্রচারক । তিনি আকবরের হিসাব রক্ষকও ছিলেন । তিনি মুঘল সেনাবাহিনীর সেনানায়ক ছিলেন ।
    • ফৈজি –তিনি ছিলেন ঐতিহাসিক আবুল ফজলের ভ্রাতা । তিনি ছিলেন আকবরের Delhi সভাকবি এবং নবরত্নের একজন । তাকে প্রথম নিযুক্ত করা হয় আকবর পুত্রদের শিক্ষক হিসাবে । তিনি লীলাবতীকে Gondwana ( একটি গণিত বই ) ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন ।
    • তানসেন –তিনি হলেন রামতনু পান্ডে । Golkunda তিনি ছিলেন একজন যন্ত্রবাদক । সে সর্বদা বাজনা নিয়েই থাকতেন । তিনি গােয়ালিয়র হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি রাজা রামচন্দ্রের সভায় বাদক হিসাবে আসায় আকবরের দৃষ্টিগােচর হয় । পরে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন । তিনি গীটারে সন্তর বাদক । তানসেন মিউজিকে যেন আগুন ঝরাত । তার বিখ্যাত রাগ ছিল মেঘ মলহার ও দীপক ।
    • রাজা বীরবল –বীরবলের আসল নাম মহেশ দাস । তিনি আকবরের সাম্রাজ্যে শাসন কার্যের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । তিনি ছিলেন হাস্যরসিক / বিদুষক কবি এবং সংগীতজ্ঞ । তার জ্ঞানে মুগ্ধ হয়ে সম্রাট তার নবরত্ন সভায় তাকে স্থান দিয়েছিলেন । তার ডাকনাম ছিল বীরবল । আকবর তাকে রাজা উপাধি দিয়েছিলেন ।
    • রাজা টোডরমল –টোডরমল ছিল আকবরের রাজস্ব বা অর্থমন্ত্রী । তিনি সাম্রাজ্যের উন্নয়নের জন্য সাম্রাজ্যকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছিলেন । তার তৈরি করা পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে পরবর্তী মুঘল সম্রাটরা রাজ্য চালনা করেছিলেন । টোডরমল শের শাহের সঙ্গে কাজ করেছিলেন । ১৫৮২ খ্রিঃ আকবর তাকে সেরা উপাধি রাজা ও দেওয়ান-ই-অসরফ দেন ।
    • রাজা মান সিংহ – মান সিংহ ছিল অম্বরের রাজা । তিনি আকবরের বশ্যতা স্বীকার করে তার সেনাবাহিনীতে যােগ দেন । তিনি ছিলেন আকবরের প্রধান সেনাপতি । পরবর্তীকালে অম্বরের রাজা বিহারিমলের কন্যাকে আকবর বিবাহ করে এবং তার পুত্র রাজা ভগবান দাসকে আকবরের সহকারী হিসাবে নিযুক্ত করেন । মান সিংহ ছিল আকবরের যুদ্ধ জয়ের মুল কান্ডারী । হলদিঘাটের যুদ্ধ , মেবার জয় , কাবুল অধিকার ও ওড়িশা জয়ের প্রধান ভূমিকায় ছিলেন মান সিংহ ।
    • আবদুল রহিম খান-ই-খান্না –আবদুল রহিম ছিলেন একজন কবি ও আকবরের সেনাপতিদের মধ্য অন্যতম । তিনি ছিলেন বৈরাম খাঁর পুত্র । বৈরাম খাঁর মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রীকে আকবর তার দ্বিতীয় স্ত্রীরূপে গ্রহণ করেন এবং তার শিশুপুত্র আবদুল রহিমকে আপন পুত্র স্নেহে পালন করেন । তিনি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও ভগবান শ্রীকৃষ্ণে মুগ্ধ হয়েছিলেন ।
    • ফকির আজিয়াও দিন – তিনি ছিলেন আকবরের মুখ্য উপদেষ্টা ।
    • মােল্লা দো পিয়জা –তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন । আকবরের আমলে তার উপদেশ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেত ।

    শেষ জীবন :-

    • ১৬০৫ খ্রিস্টাব্দের ২৭ শে অক্টোবর মধ্যরাতে আমাশয়ে আক্রান্ত হয়ে মুঘল সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ শাসক আকবর মৃত্যু বরণ করেন ফতেপুর সিক্রিতে(আগ্রা)। এই মহান সম্রাটকে সেকেন্দ্রায় সমাধিস্থ করা হয়।